পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারবেন বন্দিরা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। ‘কারাবন্দিদের মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলাসহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বন্দিদের সংশোধন ও পুনর্বাসনের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো জামদানি উৎপাদন কেন্দ্র ও পোশাক কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক, নজরুল ইসলাম বাবু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, আইজি প্রিজন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তিনি বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে মাদকসহ অবৈধ কোনও জিনিস যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এজন্য কারারক্ষীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও গেটে স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে। তবে আমি অস্বীকার করি না এর ফাঁক-ফোকর দিয়ে দুই একটা জিনিস ঢুকছে না। তবে আমরা এ ব্যাপারে সর্তক রয়েছি। আইজি প্রিজন সে ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছেন।’
নারায়ণগঞ্জ ৫ সংসদ সদস্য এবং বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সহায়তা করে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সংগ্রহ করে বায়ারদের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দেয়, তাহলে এখান থেকে তৈরি পোশাক বিদেশে রফতানি করে বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ ডলার আয় করা সম্ভব। বিকেএমইএ এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’
আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদী বন্দিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে। স্বল্পমেয়াদী বন্দিদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজে লাগানো হবে। যাতে তারা কারাগার থেকে বের হয়ে গিয়ে ওই কাজ করে পরবর্তী জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, পরিবেশ অনুযায়ী বন্দিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। যে এলাকায় যে ধরনের কাজ হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে বন্দিরা বাইরে বের হয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।’
আইজি প্রিজন জানান, জেলখানায় বন্দিদের উৎপাদিত পণ্যের প্রসারের জন্য এবার আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় একটি প্যাভিলিয়ন নেওয়া হয়েছে। এতে করে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়াবে। তিনি বলেন, ‘বন্দিদের উৎপাদিত পণ্যে লাভের ৫০ শতাংশ বন্দিকে দেওয়া হবে।’
মোবাইল ফোনে বন্দিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পাইলট একটি সফটওয়ার চালু করা হয়েছে। ওই সফটওয়্যারের মধ্যে আগেরদিন বন্দির পরিবারকে ভয়েস মেসেস দেওয়া হবে। দুটি রেজিস্ট্রার্ড মোবাইল নম্বর থেকে তারা কথা বলতে পারবে। কথা বলার রেকর্ড থাকবে। বন্দিরা মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে এভাবে কথা বলতে পারবেন।’
নতুন জামদানি উৎপাদন কেন্দ্র ও পোশাক কারখানার নাম দেয়া হয়েছে— রিজিলিয়েন্স। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়ার উদ্যোগে এটি তৈরি হয়েছে।
সাত হাজার বর্গফুট আয়তনের কারখানাটির ওপর টিনের ছাউনি দেয়া হয়েছে। এটি দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়। কারখানায় পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে প্যাকেজিং, নিটিংসহ নানা ধরনের কাজ হবে। একসঙ্গে ৩৫০ জন বসে কাজ করতে পারবেন।
কারাবন্দিদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে যে মুনাফা পাওয়া যাবে, তা বন্দিদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে জমা হবে। বন্দিদের উপার্জিত টাকা যাবে তাদেরই পরিবারের কাছে। শুধু প্রশিক্ষণ ছাড়া এ পোশাক কারখানায় বাইরের কাউকে আনা হবে না।